হোমিওপ্যাথিক ঔষধ ছাড়া ডায়াবেটিস নিমূর্ল হয় না
যদিও এলোপ্যাথিক ডাক্তাররা ডায়াবেটিসের চিকিৎসার জন্য বিরাট আলিশান এক হাসপাতালই তৈরী করে ফেলেছেন, তথাপি সত্যি কথা হলো এলোপ্যাথিতে ডায়াবেটিসের কোন চিকিৎসাই নাই। তারা যা করেন অথবা বলা যায় তারা যা পারেন, তা হলো ডায়াবেটিসের তীব্রতা বা উৎপাত কমিয়ে রাখা, নিয়ন্ত্রণে রাখা। ডায়াবেটিস নির্মুল করা বা পুরোপুরি ভালো করার ক্ষমতা এলোপ্যাথিক ঔষধের নাই। তবে ডায়াবেটিস সৃষ্টি করার ক্ষমতা এলোপ্যাথিক ঔষধের আছে। আপনি যদি ইন্টারনেটে একটু খোঁজাখুঁজি করেন, তবে এমন হাজারো গবেষণা রিপোর্টের সন্ধান পাবেন, যাতে নিরপেক্ষ চিকিৎসা বিজ্ঞানীরা প্রমাণ করেছেন যে, টিকা/ ভ্যাকসিন (vaccine) নেওয়ার কারণেই মানুষ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হয়। যখন থেকে মানুষকে পাইকারী হারে টিকা দেওয়া শুরু হয়েছে, তখন থেকেই পাইকারী হারে ডায়াবেটিস হওয়া শুরু হয়েছে। আগে জন্মের পর থেকে শিশুদের টিকা দেওয়া শুরু হতো আর এখন শিশুরা মায়ের পেটে থাকতেই তাদের গর্ভধারীনী মাকে টিকা দেওয়ার মাধ্যমে প্রকারান্তরে শিশুদেরকেই টিকা দেওয়া হচ্ছে। ফলে মায়ের পেট থেকেই শিশুরা বিষাক্ত দেহ-মন নিয়ে দুনিয়ায় আগমণ করছে। তাই ইদানীং শিশুদের মধ্যেও ডায়াবেটিসের প্রকোপ দেখা যাচ্ছে।
ভ্যাকসিন/ টিকা (vaccine) ছাড়াও ভয়ঙ্কর হাই-পাওয়ারের (?) ক্ষতিকর সব এন্টিবায়োটিক, সড়ক দুর্ঘটনায় বড় ধরনের শারীরিক আঘাত, ঘনিষ্ট কারো মৃত্যু বা পেশাগতভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার মাধ্যমে বড় ধরণের মানসিক আঘাত ইত্যাদির কুপ্রভাবে মানুষের স্বাস্থ্য ভেঙ্গে পড়ে, রোগ প্রতিরোধ শক্তির (immune system) বারোটা বেজে যায় ; ফলস্রুতিতে মানুষ ডায়াবেটিসের মতো জঘন্য রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়ে। দুঃখের সাথে বলতে হয় যে, ডায়াবেটিস আসলে কোন রোগ নয় বরং এটি একটি বিরাট লাভজনক ব্যবসা। দিন-রাতের অধিকাংশ সময় শুয়ে-বসে কাটানো শহরের অলস (এবং অন্যদিকে অতিমাত্রায় টিকা/ভ্যাকসিন ভক্ত) মানুষদের মধ্যে এই রোগ মহামারী আকারে দেখা না দিলে এ যুগের ডাক্তারদের পক্ষে এতো সহজে বাড়ি-গাড়ি-ব্যাংক ব্যালেন্স করা খুবই কঠিন হতো। ডায়াবেটিস থেকে প্রথমত সবচেয়ে বেশী লাভবান হয় ডায়াবেটিসের ঔষধ এবং ইনজেকশান উৎপাদনকারী কোম্পানিগুলো। কারণ ডায়াবেটিসের রোগীরা প্রায় সবাই কোন না কোন ঔষধ-ইনজেকশন নিয়ে থাকেন। ঔষধ কোম্পানীর মালিক এবং তাদের সমর্থক ডাক্তাররা যোগসাজস করে ঘোষণা করেছে যে, রক্তে সুগারের মাত্রা ছয়ের চাইতে বেশী হলেই বিপদ।
আপনাকে ঔষধ খেতে হবে, ইনজেকশন নিতে হবে, নিয়মিত টেস্ট করতে হবে ইত্যাদি ইত্যাদি। আসলে এগুলো হলো কমাশির্য়াল চিন্তাধারা / বাণিজ্যিক পলিসি। বাস্তবে দেখা যায়, কারো কারো সুগার ছয়-সাতে উঠলেই নানা রকম সমস্যা দেখা দেয় আবার কেউ কেউ দশ-বারো নিয়েও স্বাভাবিক জীবনযাপন করে। একেকজন মানুষের শারীরিক গঠন একেক রকম আর তাই একই থিওরী সবার ক্ষেত্রে সমানভাবে প্রযোজ্য হতে পারে না। দ্বিতীয়ত ডায়াবেটিস থেকে সবচেয়ে বেশী লাভবান হয় প্যাথলজীষ্টরা, ডায়াগনষ্টিক সেন্টারের মালিকরা, এসব টেস্টের মেশিন-পত্র এবং রিয়েজেন্ট প্রস্তুতকারী কোম্পানিরা। কারণ ডায়াবেটিসের রোগীরা সাধারণত ঘনঘন বিভিন্ন প্যাথলজীক্যাল টেস্ট করে থাকে। তৃতীয়ত সবচেয়ে বেশী লাভবান হয় ডায়াবেটিস বিশেষজ্ঞ বা মেডিসিন বিশেষজ্ঞরা। চতুর্থত সবচেয়ে বেশী লাভবান হয় কিডনী রোগ বিশেষজ্ঞরা (urologist), কারণ ডায়াবেটিসের রোগীদের সাধারণত কিডনীর রোগ বেশী হয়ে থাকে। পঞ্চমত সবচেয়ে বেশী লাভবান হয় চক্ষু বিশেষজ্ঞরা (oculist), কারণ ডায়াবেটিসের রোগীদের চোখের সমস্যা লেগেই থাকে। চর্ম-যৌন বিশেষজ্ঞরাও বেশ লাভবান হয়, কারণ ডায়াবেটিসের রোগীদের অনেকেরই যৌন দুর্বলতা/ ধ্বজভঙ্গ দেখা দিয়ে থাকে।
ডায়াবেটিস থেকে হৃদরোগ বিশেষজ্ঞরাও (cardiologist) কম লাভবান হন না, যেহেতু ডায়াবেটিস রোগীদের হার্টের সমস্যা বেশী হতে দেখা যায়। এমনকি হরমোন বিশেষজ্ঞরাও বেশুমার রোগী পেয়ে থাকেন যারা দীর্ঘদিন যাবৎ ডায়াবেটিসে ভোগছেন তাদের মধ্যে থেকে। সার্জনরাও প্রচুর লাভবান হয়ে থাকেন, কেননা ডায়াবেটিস রোগীদের প্রায়ই হাত-পায়ে গ্যাংগ্রিন (gangrene), মারাত্মক আলসার (ulceration) ইত্যাদি দেখা দিয়ে থাকে। স্মায়ুরোগ বিশেষজ্ঞ (neurologist) এবং মানসিক রোগ বিশেষজ্ঞরাও (psychiatrist) ডায়াবেটিস থেকে উপকৃত হয়ে থাকেন, কেননা দীর্ঘদিন ডায়াবেটিসে ভোগলে স্মায়ুঘটিত রোগ এবং মানসিক রোগ দেখা দিবেই। ডায়াবেটিসের কারণে কবিরাজরাও যথেষ্ট লাভবান হয়, কেননা অনেক রোগীরই কবিরাজি-ইউনানী-আয়ুর্বেদী চিকিৎসার প্রতি ভীষণ ভক্তি দেখা যায়। ডায়াবেটিসের কারণে হোমিওপ্যাথিক ডাক্তাররাও বেশ লাভবান হয়, কারণ অনেকেরই হোমিও ঔষধের প্রতি অন্ধভক্তি আছে। তাছাড়া অনেকে দশ-বিশ বছর প্রচলিত চিকিৎসা করেও ডায়াবেটিসমুক্ত হতে না পারার কারণে হোমিও চিকিৎসা শুরু করে দেয়।
ডায়াবেটিসের প্রচলিত এলোপ্যাথিক চিকিৎসার বিষয়টি গত ৮০ বছরে ধীরে ধীরে সারাবিশ্বের মানুষদের মধ্যে এমনভাবে শিকর গেড়েছে যে, এটি বতর্মানে মানুষের কাছে ধর্ম বিশ্বাসে (religion) পরিণত হয়েছে। আর কোন একটি বিষয় যখন মানুষের কাছে অন্ধবিশ্বাসে পরিণত হয়, তখন তাকে আর যুক্তি-তর্ক দিয়ে বুঝানো যায় না। ঔষধ কোম্পানীগুলোর নীতি হলো শিশু থেকে বুড়ো পযর্ন্ত সবাইকে ঔষধ খাওয়াতে হবে, ভ্যাকসিন দিতে হবে। যেভাবেই হোক বছর বছর লাভের মাত্রা বাড়াতে হবে। চিকিৎসার নামে দুনিয়ার সমস্ত মানুষকে সারাজীবনের জন্য তাদের ওপর নিভরর্শীল করে রাখতে হবে। ডায়াবেটিসের সংক্রান্ত সমস্ত গবেষণায় এসব ঔষধ কোম্পানী অর্থ যোগান দেয় এবং এভাবে তারা চিকিৎসা বিজ্ঞানকে নিজেদের ইচ্ছেমতো পরিচালিত করে থাকে। ডাক্তাররা মেডিক্যাল কলেজে কি শিখবে এবং কিভাবে ডাক্তারী করবে, তার সবই এসব ঔষধ কোম্পানীর পরিকল্পনা মতো হয়ে থাকে। বহুজাতিক ঔষধ কোম্পানীগুলোর এই পৈশাচিক লোভের শিকারে পরিণত হয়ে বহুল প্রচলিত এলোপ্যাথিক চিকিৎসা বিজ্ঞান আজ মানবজাতির জন্য গযবে পরিণত হয়েছে।
আপনার ডাক্তার কখনও আপনাকে বলবে না যে, রক্ত সঞ্চয়জনিত হৃদরোগ (ischaemic heart diseases), স্মায়ুঘটিত হার্ট ফেইলার (neuropathic heart failure), করোনারি হৃদরোগ (coronary heart diseases), মেদভূড়ি সমস্যা (obesity), রক্তনালীতে চর্বি জমা (atherosclerosis), উচ্চ রক্তচাপ (elevated blood pressure), কোলেস্টেরলের মাত্রা বৃদ্ধি (elevated cholesterol), ট্রাইগ্লিসারাইডের মাত্রা বৃদ্ধি (elevated triglycerides), যৌন অক্ষমতা (impotence), চোখের রেটিনার রোগ (retinopathy), কিডনী ফেইলুর (renal failure), লিভার ড্যামেজ (liver failure), ডিম্বাশয়ের টিউমার (polycystic ovary syndrome), রক্তে সুগারের মাত্রা বৃদ্ধি (elevated blood sugar), ক্যানডিডা সংক্রমণ (systemic candida), ত্রুটিপূর্ণ শ্বেতসার বিপাক (impaired carbohydrate metabolism), ঘা শুকাতে দেরি হওয়া (poor wound healing), ত্রুটিপূর্ণ চর্বি বিপাক (impaired fat metabolism), প্রান্তীয় স্মায়বিক রোগ (peripheral neuropathy) ইত্যাদিকে এক সময় ডায়াবেটিসেরই লক্ষণ মনে করা হতো। আপনি যদি কোন এলোপ্যাথিক ডাক্তারের কাছে ডায়াবেটিসের নিমূর্ল বা ডায়াবেটিস থেকে ১০০ ভাগ মুক্তির ব্যাপারে জানতে চান, তবে তিনি বিরক্ত হবেন। কারণ তাকে শিক্ষা দেওয়া হয়েছে ডায়াবেটিসের "চিকিৎসা আছে কিন্তু কোন স্থায়ী মুক্তি (বা নিরাময়) নাই"। অথচ ডায়াবেটিস পুরোপুরি নিরাময়যোগ্য (curable) একটি রোগ। কিন্তু এজন্য (ডায়াবেটিস) রোগ এবং রোগী দুটোর চিকিৎসা করতে হবে একত্রে বা সামগ্রিকভাবে (holistic)। কিন্তু বতর্মানে প্রচলিত চিকিৎসা পদ্ধতিতে ডায়াবেটিস রোগীদের সুগারের চিকিৎসা করেন একজন বিশেষজ্ঞ, খাদ্যাভাসের চিকিৎসা করেন আরেকজন, চোখের জটিলতার চিকিৎসা করেন একজন, কিডনীর জটিলতার চিকিৎসা করেন আরেকজন, লিভারের সমস্যার চিকিৎসা করেন একজন, হার্টের পীড়ার চিকিৎসা করেন আরেকজন, চর্মরোগের চিকিৎসা করেন একজন, রক্তের অসুখের চিকিৎসা করেন আরেকজন ইত্যাদি ইত্যাদি। মোটকথা, মরা গরুর লাশ নিয়ে যেমন শুকুনদের মধ্যে কাড়াকাড়ি শুরু হয়ে যায়, ডায়াবেটিস রোগীদের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ নিয়েও বিশেষজ্ঞদের (?) মধ্যে তেমনটা লক্ষ্য করা যায়।
আমার মূল বক্তব্য হলো, অন্যান্য জটিল রোগের (chronic disease) মতো ডায়াবেটিসেরও সবচেয়ে ভালো এবং সেরা চিকিৎসা আছে একমাত্র হোমিওপ্যাথিতে (Homeopathy)। নতুন আর পুরাতন দু'ধরণের ডায়াবেটিসেরই সবচেয়ে ভালো চিকিৎসা হোমিওপ্যাথিতে আছে। ডায়াবেটিস হওয়ার মুল কারণ কি ? সাধারণ মানুষের বুঝার মতো ভাষায় বলতে গেলে বলতে হয়, আমাদের শরীরের হজম শক্তি কমে যাওয়াই হলো ডায়াবেটিসের মুল কারণ। সাধারণ মানুষ যদিও মনে করে আমাদের খাদ্য-দ্রব্য পাকস্থলী বা পেটে হজম হয় কিন্তু তা একেবারেই ভুল ধারণা। পাকস্থলী এবং নাড়িভুড়িতে খাদ্য-দ্রব্য হজম হয় না বরং বলা উচিত শোষণ (absorb) হয়। সেখান থেকে শোষণ হয়ে রক্তের মাধ্যমে প্রতিটি কোষে কোষে পৌঁছে যায়। আমাদের শরীরে যে কোটি কোটি কোষ আছে, খাদ্য-দ্রব্য হজমের কাজটি হয় সেই কোষগুলোতে। ডাক্তারী ভাষায় একে বলা হয় বিপাক ক্রিয়া (metabolism)। ইহার পরিমাপকে বলা হয় বিপাক ক্রিয়ার হার (BMR-basal metabolic rate)।
কোষগুলোতে খাদ্য-দ্রব্য হজম হয়ে শক্তি তৈরী হয় যা দিয়ে আমাদের শরীরের সমস্ত কাজ-কর্ম চলে। তাই ডায়াবেটিস সমপুর্ণরূপে নির্মুল করতে চাইলে আমাদেরকে শরীরের হজম শক্তি বাড়াতে হবে অর্থাৎ কোষের বিপাক ক্রিয়ার হার বাড়াতে হবে। আর সত্যি কথা হলো, শরীরের বিপাক ক্রিয়ার হার বাড়ানোর ক্ষমতা কেবল হোমিও ঔষধেরই আছে। আয়োডিয়াম (Iodium), ক্যালকেরিয়া কার্বনিকাম (Calcarea carbonica), ফিউকাস ভেসিকোলোসিস (Fucus vesiculosis), ফাইটোল্যাক্কা ডেকানড্রা (Phytolacca decandra) ইত্যাদি হোমিও ঔষধগুলি শরীরের বিপাক ক্রিয়ার হার বৃদ্ধি করতে পারে। বিশেষত আর্সেনিকাম ব্রোমেটাম (Arsenicum Bromatum), সিজিজিয়াম (Syzygium), এসিড ফস (acidum Phosphoricum), জিমনেমা সিলবাস্টা (Gymnema sylvestra) ইত্যাদি হোমিও ঔষধগুলো যে-কোন ডায়াবেটিস রোগী খেয়ে উপকার পাবেন ; সাধারণত এতে কোন ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়ার প্রয়োজন পড়বে না (নিম্নশক্তিতে ১০ ফোটা করে রোজ ৩ বার)। তবে ডায়াবেটিসের মূল কারণসমূহ দূর করা এবং শরীরকে বিষমুক্ত করার কাজে হোমিও স্পেশালিষ্টের পরামর্শ দরকার।
যদিও শারীরিক-মানসিক-পারিবারিক-জলবায়ুজনিত লক্ষণ সমষ্টির উপর ভিত্তি করে প্রদত্ত যে-কোন হোমিও ঔষধেই ডায়াবেটিস সমপুর্ণ নির্মুল হয়ে যায়। তবে এই দুইটি ঔষধ হলো একেবারে স্পেসিফিক। সত্যি বলতে কি ডায়াবেটিস আসলে একটি রোগ নয় ; বরং বলা যায় এটি অনেকগুলি রোগের সমষ্টি (group of diseases)। অথবা বলা যায় ডায়াবেটিসের পেছনে অনেকগুলো কারণ (Link) থাকে। ডায়াবেটিস সম্পূর্ণ নির্মূল করার জন্য প্রথমে এই কারণগুলিকে একটি একটি করে দূর করতে হয়। কিন্তু অন্যান্য বিভিন্ন পন্থী ডাক্তাররা এই কারণগুলো সম্পর্কে কিছুই জানেন না এবং এই কারণগুলো দূর করার ক্ষমতাও তাদের ঔষধের নাই। তাদের একমাত্র টার্গেট হলো রক্তে সুগারের মাত্রা কমিয়ে রাখা। ইদানীং আবার সে-সব ডাক্তাররা পেটুক রোগীদের শরীরে অপারেশন করে পাকস্থলী কেটে ছোট করে দিচ্ছে যাতে বেশী খেতে না পারে, ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের জন্য ! এসব কাণ্ডকারখানা চিকিৎসার নামে ববরর্তা ছাড়া কিছুই না। আমাদেরকে মনে রাখতে হবে যে, খেজুর গাছের গোড়া না কেটে যতই অপারেশন-মলম-ট্যাবলেট-ইনজেকশান প্রয়োগ করা হউক না কেন, তাতে কিন্তু খেজুরের রসের উৎপাদন বন্ধ করা যাবে না।
রক্তে সুগারের মাত্রা কেন বাড়ে তা নিয়ে তাদের কোন মাথাব্যথা নাই বরং সুগারের মাত্রা কিভাবে কমানো যায় তাই নিয়ে ব্যস্ত। ফলে অস্বাভাবিক পথে শরীরের ওপর জবরদস্তি করে সুগারের মাত্রা কন্ট্রোল করার জন্য তারা যে-সব ঔষধ/ ইনজেকশান রোগীদেরকে দেন, সেগুলো দুয়েক বছর কাজ করলেও তারপর আর কোন কাজ করে না। আমাদের শরীর এমনই অদ্ভূত ক্ষমতার অধিকারী যে, বিষাক্ত ঔষধকেও এক সময় সে হার মানিয়ে দেয়। ফলে ডাক্তাররা ধীরে ধীরে ঔষধ/ ইনজেকশানের মাত্রা বাড়িয়ে দেন কিন্তু তারপরও সুগারের মাত্রা আর কন্ট্রোলে আনা যায় না। মাঝখানে এসব বিষাক্ত ঔষধের ধাক্কায় ধীরে ধীরে ডায়াবেটিস রোগীদের কিডনী নষ্ট হয়ে যেতে থাকে। আর কিডনী যেহেতু নষ্ট হওয়ার কারণে ঠিকমতো রক্ত পরিষ্কার করতে পারে না, ফলে রক্ত বিষাক্ত হয়ে পড়ার কারণে রক্ত চলাচলের সাথে বেশী সম্পর্ক আছে, এমন অঙ্গগুলোও ধীরে ধীরে অকেজো হয়ে পড়তে থাকে (যেমন- হৃদপিন্ড, ব্রেন, স্নায়ু, চোখ ইত্যাদি)।
ডায়াবেটিসের প্রচলিত চিকিৎসা অনেকটা এরকমই। প্রথমে ডাক্তাররা কয়েক বছর ডায়েট কন্ট্রোল এবং হাঁটাহাঁটির মাধ্যমে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের চেষ্ঠা করেন কিন্তু ব্যর্থ হন। তারপর কয়েক বছর ট্যাবলেট-ক্যাপসুল দিয়ে নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেন কিন্তু ব্যর্থ হয়ে শেষে ইনসুলিন (insulin) ইনজেকশান দিয়ে নিয়ন্ত্রণের চেষ্ঠা করেন। প্রথমে কিছুদিন কাজ হলেও শেষে আর ইনসুলিন ইনজেকশানেও ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে আনা যায় না। ডায়াবেটিসের অশুভ গতি ফেরাতে না পারার কারণে ধীরে ধীরে কিডনী, হৃদপিন্ড, ব্রেন, চক্ষু ইত্যাদিতে নানান জটিলতা দেখা দিতে থাকে। ফলে এই সকল রোগের চিকিৎসার জন্য ডাক্তাররা বস্তা বস্তা ঔষধ খাওয়াতে থাকেন। ফলে কয়েক বছরের মধ্যেই ডায়াবেটিসের উৎপাত এবং ভয়ঙ্কর বিষাক্ত ঔষধগুলির বিষক্রিয়ায় কিডনী দুটি নষ্ট হয়ে ডায়াবেটিস রোগীরা কবরে চলে যান।
এই প্রসংগে বলতে হয় যে, হাত-পায়ের পচঁন বা গ্যাংগ্রিনেরও (gangrene) সবচেয়ে উৎকৃষ্ট চিকিৎসা আছে হোমিওপ্যাথিতে। অথচ অন্যান্য চিকিৎসা পদ্ধতিতে ডাক্তাররা গ্যাংগ্রিন হলে ঔষধে ভালো করতে না পেরে প্রথমে আঙুল কেটে ফেলে দেন, তারপর গ্যাংগ্রিন বাড়তে থাকলে সে-সব পন্থী ডাক্তাররা পায়ের গোড়ালি পযর্ন্ত কেটে ফেলে দেন। তারপর গ্যাংগ্রিন আরো বাড়তে থাকলে হাঁটু পযর্ন্ত এবং শেষে কোমড় পযর্ন্ত পা কেটে ফেলে দেন। এভাবে দেখা যায় যে, দুই-তিনটি অপারেশনের ধাক্কা সামলাতে না পেরে গ্যাংগ্রিনের রোগীরা দুয়েক বছরের মধ্যে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন। অথচ হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসায় কেবল মিষ্টি মিষ্টি ঔষধ মুখে খাওয়ার মাধ্যমেই খুবই কম সময়ে এবং কম খরচের মাধ্যমে গ্যাংগ্রিন সারিয়ে দেওয়া যায়।
রোগী অতীতে কি কি ঔষধ খেয়েছেন/ ভ্যাকসিন নিয়েছেন, কি কি রোগে আক্রান্ত হয়েছেন এবং সেগুলো তার স্বাস্থ্যকে কিভাবে-কতটা ক্ষতিগ্রস্ত করেছে, ইত্যাদি নিয়ে সাধারণত অন্যান্যপন্থী ডাক্তাররা মাথা ঘামান না। পক্ষান্তরে একজন হোমিও ডাক্তার রোগীর মাথার চুল থেকে পায়ের নখ পযর্ন্ত, তার অতীত থেকে বর্তমান পযর্ন্ত, শরীরের বাহ্যিক রূপ থেকে মনের অন্দর মহল পযর্ন্ত সকল বিষয় বিবেচনা-পযার্লোচনা করে হাজার হাজার হোমিও ঔষধ থেকে রোগীর জন্য সবচেয়ে মানানসই ঔষধ খুঁজে বের করে প্রয়োগ করেন। আর এই কারণেই হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসায় সবচেয়ে সহজে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ এবং নির্মূল করা যায়। হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসায় ডায়াবেটিস পুরোপুরি নিমূর্ল করতে প্রথমে সেই ব্যক্তি জন্মগতভাবে (Genetics) যে-সব দোষত্রুটি নিয়ে জন্মেছেন, সেগুলোর সংশোধন করতে হয়। তারপর বিষাক্ত এলোপ্যাথিক বা কবিরাজি ঔষধ খেয়ে শরীরের যে-সব ক্ষতি করেছেন, শরীর থেকে সে-সব বিষ দূর করতে হয়। তারপর টিকার (vaccine) মাধ্যমে শরীরে যতটা প্রলয়কাণ্ড ঘটিয়েছেন, তার ক্ষতিপূরণ করতে হয়। তারপর অপারেশন / একসিডেন্ট ইত্যাদির মাধ্যমে শরীরের যতটা ক্ষতি হয়েছে, সেগুলোর সংস্কার করতে হয়। আপনজনের মৃত্যু, প্রেমে ব্যথর্তা, বন্ধুর বিশ্বাসঘাতকতা, চাকুরি / ব্যবসায়ের পতন ইত্যাদি দুবির্পাকে সৃষ্ট মানসিক বেদনা থেকে শরীরের যেটুকু ক্ষতি হয়েছে, তাহা মেরামত করতে হয়। মোটকথা, বিভিন্ন ভাবে আমাদের দেহ-মনে যত বিষ ঢুকেছে, আমাদের শরীরকে সে-সব বিষ থেকে মুক্ত করতে হয়।
আসলে হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা হলো বিষমুক্তির (detoxification) চিকিৎসা। অন্যান্য চিকিৎসা পদ্ধতি আমাদের দেহ-মনকে বিষাক্ত (poisoning) করে আর হোমিও চিকিৎসা আমাদের দেহ-মনকে বিষমুক্ত করে। হ্যাঁ, বিষমুক্ত হওয়ার পরে আমাদের শরীর আবার তার স্বাভাবিক গতিতে চলতে শুরু করে। আমাদের দেহ-মনকে বিষমুক্ত করতে অধিকাংশ ক্ষেত্রে এক থেকে দুই বছরের মতো লাগতে পারে। আবার অবিশ্বাস্য মনে হলেও একথা সত্য যে, অনেক সময় রোগীর শরীরের বিষের উৎপাত কম থাকলে এবং রোগীর একশভাগ লক্ষণ মিলিয়ে দিতে পারলে মাত্র এক ফোটা হোমিও ঔষধেই ডায়াবেটিস নির্মূল হয়ে যায়। তবে হোমিওপ্যাথির ওপর যাদের বিশ্বাস কম, তারা ইচ্ছে করলে কিছুদিন হোমিও ঔষধের সাথে অন্যান্য ঔষধও চালিয়ে যেতে পারেন। হোমিও ঔষধ সাধারণত অন্যান্য ঔষধের সাথে রিয়েকশান করে না। পরিশেষে ডায়াবেটিস বিশেষজ্ঞসহ সকল মেধাবী ডাক্তারদের নিকট আমাদের অনুরোধ থাকবে, ডায়াবেটিসের অভিশাপ থেকে মানবজাতিকে মুক্ত করতে তাঁরা যেন হোমিও ঔষধ প্রেসক্রাইব করেন।
ডাঃ বশীর মাহমুদ ইলিয়াস
লেখক, ডিজাইন স্পেশালিষ্ট, হোমিও কনসালটেন্ট
চেম্বার ঃ জাগরণী হোমিও হল
৪৭/৪ টয়েনবী সার্কুলার রোড,
(ইত্তেফাক মোড়ের পশ্চিমে এবং ষ্টুডিও ২৭-এর সাথে)
মতিঝিল, ঢাকা।
ফোন ঃ +৮৮০-০১৯১৬০৩৮৫২৭
E-mail : Bashirmahmudellias@hotmail.com
Website : http://bashirmahmudellias.blogspot.com
ক্যানসারের চিকিৎসায় ভয়ঙ্কর বিপদ
http://bashirmahmudellias.blogspot.com/2009/10/cancer-and-its-perilous-treatment_31.html
মানসিক রোগীদের চরম দুর্ভাগ্য
http://bashirmahmudellias.blogspot.com/2009/10/mental-patients-their-tradgedy.html
হৃদরোগের সবচেয়ে ভালো চিকিৎসা আছে হোমিওপ্যাথিতে
http://bashirmahmudellias.blogspot.com/2010/02/cardiac-diseases-their-easy-cure.html
কিডনী রোগের প্রকৃত কারণ এবং চিকিৎসা
http://bashirmahmudellias.blogspot.com/2009/10/kidney-diseases-their-real-cause-and.html
শিশুদের টিকা থেকে সাবধান
http://bashirmahmudellias.blogspot.com/2008/10/beware-of-childhood-vaccine.html
প্যাথলজিক্যাল টেস্ট মারাত্মক ক্ষতিকর
http://bashirmahmudellias.blogspot.com/2010/04/pathological-tests-are-seriously.html
Free homeopathic e-consultation
ফ্রি হোমিওপ্যাথিক ই-কনসালটেশান
http://bashirmahmudellias.blogspot.com/2009/11/free-homeopathic-e-consultation.html
No comments:
Post a Comment